তরবিয়তের পরিচয়
তরবিয়ত মানে 'মানুষ' গড়া
তরবিয়ত মূলত আরবী শব্দ—যার অর্থ সভ্যতা-ভব্যতা ও আদব-কায়দা শিক্ষা দেওয়া। সুপ্ত প্রতিভার পরিচর্যা করে সুকুমারবৃত্তি বিকশিত করা। উত্তম শিষ্টাচারে দীক্ষিত করে অধীনস্থকে প্রকৃত মানবরূপে গড়ে তোলা।
অতএব ‘তরবিয়ত’ অন্তরে লালিত কোনো চিন্তা-চেতনা নয়। মুখে আওড়ানো কোনো প্রবাদ-প্রবচন নয়। আবার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি বা বৈজ্ঞানিক মতবাদও নয়; বরং তরবিয়ত হলো মানবজীবনকে পরিশীলিত করা। মানুষকে প্রকৃতার্থে মানবরূপে গড়ে তোলা। তার ভেতরকার সুকুমারবৃত্তি বিকশিত করা। তার কাঁচা যোগ্যতা পরিপক্ক করা। আচার-ব্যবহার, চাল-চলন পর্যবেক্ষণ করা—যাতে সে পূর্ণতার চূড়ান্ত সীমায় উন্নীত হয়ে প্রকৃত মানুষ হতে পারে। এক কথায় তরবিয়ত মানে ‘মানুষ’ গড়া।
তরবিয়তের পরিধি
তরবিয়তের পরিমণ্ডল বড় প্রশস্ত। জীবনের প্রতিটি আঁকেবাঁকে এর বিস্তৃতি। প্রতিটি উত্থান-পতনে এর ব্যাপ্তি। ফলে এ ব্যাপারে ভালোভাবে ওয়াকেফহাল হতে গেলে প্রচুর সময় দিতে হয়। করতে হয় পর্যাপ্ত মেহনত। দীক্ষাদানে লিপ্ত মুরব্বি বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে না পারলে মেহনতের ফলাফল ইতিবাচক হয় না। একই বিষয় সবার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া যায় না। কারণ, কারও ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত উপযোগী হলেও অন্যের জন্য তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে হতাশা জেঁকে বসে প্রায়শই। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকা, পিতামাতা, দাদাদাদি, নানানানিসহ সর্বস্তরের অভিভাবকদের গুরুদায়িত্ব হলো তরবিয়তের শাখা-প্রশাখা ও ব্যাপকতা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা অর্জন করা।