অনুবাদকের কথার কিছু অংশঃ

‘সুবাহ কি বরকতে আওর নামাজে ফজর কি আহমিয়াত' নামাক বইটি কিছুদিন পূর্বে হস্তগত হয়। সফল প্রকাশক বন্ধুবর রহমতুল্লাহ সাহেবের মাধ্যমে বইটির সাক্ষাৎ লাভে ধন্য হই। প্রথম নজরেই সূচিপত্রের আদ্যোপান্ত দেখার সুযোগ হয়। সূচির আলোচ্য বিষয়গুলো আমাকে আকৃষ্ট করতে থাকে। তাই বইটির শেষ হরফ পর্যন্ত পাঠের সিদ্ধান্ত নিই। পৃষ্ঠা যতই উল্টাচ্ছিলাম, ততই যেমন মুগ্ধ হচ্ছিলাম, ঠিক তেমন উপকৃতও হচ্ছিলাম। কারণ, শুধু সকাল ও ভোর নিয়ে এত চমৎকার একটি সংকলন অতীত জীবনে আর কখনোই দেখা হয়নি। পড়াও হয়নি। ভোর, সকাল, ফজর, ইশরাক, চাশত, দোহা ইত্যাদি সময়ের গুরুত্ব ও ফজিলতসহ খুব ভোরে শয্যাত্যাগ, প্রাতঃকালীন আমল ও দুআসমগ্র ইত্যাকার আরও জীবনঘনিষ্ট তত্ত্ব, তথ্য ও উপকারী পরামর্শসমূহ বইটিতে স্থান পেয়েছে। দলিল-প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়েছে অত্যন্ত চমৎকারভাবে। যে-কোনো পাঠকই তা খুব সহজে অনুমান করতে পারবেন। বিশেষভাবে বইটিতে যে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব পেয়েছে তা হলো, ফজর নামাজ জামাতের সাথে পড়ার কলাকৌশল, তার উপকারিতা, ফজর না পড়ে ঘুমিয়ে থাকার ইহকালীন ও পরকালীন ক্ষয়-ক্ষতিসমূহ ইত্যাদি বিষয় ।

মুসলিম উম্মাহর মূল যেই আধ্যাত্মিক শক্তি ছিল তা হলো, শেষ রাতের কান্নাকাটি, তাহাজ্জুদ, কুরআন তিলাওয়াত, রিয়াজত-মুজাহাদা ও ফজরের পূর্বাপর আমল ও জিকির-আজকার ইত্যাদি। নিকটবর্তী অতীতেও এর গুরুত্ব ও ইহতেমাম সমাজের অধিকাংশ লোকের মাঝে প্রত্যক্ষ করা যেত। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, যুগের আবর্তনে, আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও ইন্টারনেটের লাগামহীন ব্যবহারের ফলে আজ ধীরে ধীরে জাতি ও সমাজ থেকে এসব বিদায় নিয়ে যাচ্ছে। বস্তুবাদের প্রাচুর্য, হাতে হাতে ইলেকট্রিক ডিভাইস, ঘরে ঘরে টেলিভিশন ইত্যাদির ধ্বংসাত্মক থাবায় মুসলিম উম্মাহ তথাকথিত পার্থিব উন্নয়ন-উন্নতির শিরোনামে আসল, মৌলিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ও অগ্রগতি হতে চিরতরে বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে মুসলিম জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে যাচ্ছে। ঘরে ঘরে ধর্মহীনতা, ধর্মের নামে অধর্ম চর্চা, বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুবসমাজের জীবন-যৌবন চরমভাবে হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে। বিজাতীয় শক্তিগুলো ইসলাম ও মুসলমানের ওপর ধীরে ধীরে চড়াও হয়ে যাচ্ছে।...